ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যে শক্তিশালী পাল্টা হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হ্যাগারি এক বিবৃতিতে বলেন, ইরান গুরুতর ভুল করেছে এবং এর জন্য তাদের আজ রাতেই ফল ভোগ করতে হবে।
তিনি আরও জানান, ইরানের হামলার প্রভাব তুলনামূলকভাবে কম ছিল, কারণ ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং জনসাধারণের দায়িত্বশীল আচরণ অনেক ক্ষয়ক্ষতি রোধ করতে সক্ষম হয়েছে। ইসরায়েল প্রায় ১৮০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করেছে, যা ইরান থেকে ছোঁড়া হয়েছিল। যদিও কিছু ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে, এখনো হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইরানের এই হামলাকে “বড় ভুল” আখ্যা দিয়ে বলেছেন, এর জন্য ইরানকে চড়া মূল্য দিতে হবে। অন্যদিকে, ইরানের রেভ্যুলশনারি গার্ড জানিয়েছে, এই হামলা হামাস, হেজবুল্লাহ এবং ইরানের শীর্ষ কমান্ডারদের হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে চালানো হয়েছে এবং ইসরায়েল যদি পাল্টা আক্রমণ চালায়, তবে আরও বড় হামলা আসবে।
এদিকে, ইরানের হামলার মধ্যেই ইসরায়েল লেবাননের রাজধানী বৈরুতে বিমান হামলা চালিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের চলমান এই সংঘাত নিয়ে আলোচনার জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বুধবার বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আজ (বুধবার) জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন নিরাপত্তা পরিষদকে লেখা এক চিঠিতে অভিযোগ করেন, ইরান ইসরায়েলকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। তিনি ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) কে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ইরান দাবি করেছে, ফিলিস্তিনের গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলের হত্যা ও হামাস, হিজবুল্লাহ, এবং আইআরজিসির নেতাদের গুপ্তহত্যার প্রতিশোধ হিসেবে তারা এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে ইরান ইসরায়েলের দিকে ১৮০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে, যার মধ্যে অধিকাংশই ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আইডিএফ দ্বারা ধ্বংস করা হয়। তবে কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র তাদের লক্ষ্যে আঘাত হানে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি তেহরানের প্রতি কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইসরায়েল এই হামলার প্রতিশোধ নেবে এবং ইরানের কর্মকাণ্ড মধ্যপ্রাচ্যকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
অন্যদিকে, ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড জানিয়েছে, যদি ইসরায়েল পাল্টা আক্রমণ চালায়, তবে আরও বড় হামলা চালানো হবে।