শহীদ নূর হোসেন দিবসে রাজধানীর জিরো পয়েন্টে ফ্যাসিবাদবিরোধী স্লোগানে প্রতিবাদের উত্তাপ ছড়ায়। শেখ হাসিনার বিশৃঙ্খলার হুমকির প্রতিবাদে আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন, ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে উপস্থিত হন। যদিও সংস্কার ও নির্বাচন পদ্ধতির বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে, তবুও আওয়ামী লীগ বিরোধিতায় সবাই একত্র হয়েছে। গতকাল রোববার, জিরো পয়েন্টে কয়েক হাজার মানুষ দলমত নির্বিশেষে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়। ডান, বাম, মধ্যবামপন্থী এবং জাতীয়তাবাদী দলগুলো থেকে শেখ হাসিনার বিচারের দাবি ওঠে, আর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও ইন্টারপোলের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করার দাবি জানায়।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী আসার চেষ্টা করলেও, তারা গণধোলাইয়ের শিকার হয়ে পুলিশে সোপর্দ হন। বিভিন্ন জেলা থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি পালন করা হয়। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর ও সিলেটেও আওয়ামী লীগ প্রতিহত কর্মসূচি পালিত হয়। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ ফেসবুকে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারকে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি নিয়ে আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মীর ঢাকায় জমায়েতের চেষ্টা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়। ৯ নভেম্বর রাত থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিএনপির নেতাকর্মীরা জিরো পয়েন্টে অবস্থান নেয় এবং শেখ হাসিনার বিচারের দাবিতে স্লোগান তোলে। সকাল থেকে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো মিছিল নিয়ে এসে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় এবং নূর হোসেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।
এ সময় বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। ‘আমার সোনার বাংলায়, ফ্যাসিবাদের ঠাঁই নাই’, ‘আওয়ামী লীগ নিপাত যাক’ প্রভৃতি স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়। একজন যুবক জয় বাংলা স্লোগান দিলে তাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ সিপিবি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, গণসংহতি আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠন এ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের অপকর্ম বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে হবে এবং সুশীল সমাজকেও এ আন্দোলনে অংশ নিতে আহ্বান জানান।
এদিন বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করে জিরো পয়েন্টে এবং বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে এসে স্লোগান দেয়। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এবং সিপিবি নেতা রোহিন হোসেন প্রিন্স শেখ হাসিনার বিচার এবং ফ্যাসিবাদ বিরোধী পদক্ষেপের কথা জানান।