ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অর্জন করেছেন। এই সফরটি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, অর্থনৈতিক সংস্কার, এবং বৈশ্বিক ইমেজ পুনর্গঠনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে।
প্রথমত, ড. ইউনূস মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ ১২টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এবং ৪০টি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণ করেছেন। এই বৈঠকগুলোতে তিনি গণতন্ত্র, মানবাধিকার, এবং বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন, যা বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের যে টানাপোড়েন ছিল, তা অনেকটাই সমাধান হয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
দ্বিতীয়ত, অর্থনৈতিক সংস্কারে বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের প্রতি সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ৩.৫ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা করেছে, যা অর্থনৈতিক সংস্কারে সহায়ক হবে।
তৃতীয়ত, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে, এবং যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
চতুর্থত, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরো গভীর করার কথা বলা হয়েছে, যা নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ অন্যান্য খাতে সহযোগিতার দরজা খুলে দেবে।
তবে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক না হওয়া কিছুটা আলোচনার বিষয় হলেও, বিশ্লেষকরা মনে করেন এটি বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না।
এই সফরটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করার সুযোগ তৈরি করেছে, এবং ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশকে একটি নতুনভাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও ভূমিকা রেখেছে।